আমি বহুবার বলেছি, তাদের মধ্যে কয়েকজন পেটেন্ট টেররিস্ট, নগণ্য সংখ্যক কিছু মানবিক চেতনা সম্পন্ন লোক আছে যারা ওদের সমাজের অন্তর্ভুক্ত হলেও ওদের সমাজের চোখে ‘মুনাফেক’ এবং তারা ঘৃণিত এবং উপহাসের পাত্র। এদের বাদ দিলে বাকিরা সবাই লেটেন্ট টেররিস্ট। কখন কে জঙ্গিযোগে ধরা পড়ে আপনাকে অবাক করবে আপনি আন্দাজই করতে পারবেন না। কারণ টেররিজম তাদের বিলিফ সিস্টেমের ভিত্তি। অবিশ্বাসীদের প্রতি অন্তহীন ঘৃণা, বিদ্বেষ, জিঘাংসা তাদের কৌমি চেতনার সার। পৃথিবীর প্রতিটি ধূলিকণার উপরে রাজনৈতিক প্রভুত্ব কায়েম করা তাদের ধর্মাচরণের প্রেরণা।
সম্প্রতি রাজ্যে আলকায়েদা, আইএস, জেএমের সাথে যুক্ত বহু লোক ধরা পড়েছে, আগামী দিনেও পড়বে। পাড়ার লোকেরা বারবার অবাক হবে, আমরা ততোধিক অবাক হবো। তারপরে এই আশায় বুক বেঁধে বসে থাকবো যে জঙ্গিপুরের পরে নিশ্চই আর কোথাও কোনও টেররিস্ট ধরা পড়বে না!! যারা বাকি থাকলো তারা সকলেই দেশভক্ত নাগরিক। এদের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকানোই হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। কেউ এদের জন্য ‘শ্রী’ যুক্ত প্রকল্প শুরু করবে, কেউ আবার ‘এক হাতে হেটবুক অন্যহাতে ল্যাপটপ’ তুলে দিয়ে ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’-এর তত্ত্ব তুলে ধরবে। আর আমরা ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মত হয় ‘মা মাটি মানুষ জিন্দাবাদ’ নয়তো ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তুলে রাস্তা কাঁপাবো।
কোদালকে কোদাল বলে স্বীকার করার সাহস না দেখাতে পারলে বারবার এরকমভাবে অবাক হতে হবে। খাগড়াগড় দেখে অবাক হবেন, মেয়ের সৌম্য-ভদ্র বয়ফ্রেন্ডের জঙ্গিযোগ দেখে যারপরনায় অবাক হবেন, শেষে উদ্বাস্তু হয়ে পালাতে পালাতে চরমবিস্ময়ে অভিভূত হবেন- আহা! সেকুলারিজমের কী মহিমা!! কী অসাধারণ মানবিক চেতনা!! তাড়িয়ে দিলেও খুন তো করেনি! মেয়েটাকে জোর করে রেখে দিলেও গণধর্ষণ করে খাসী ঝোলানোর আংটায় উল্টো করে ঝুলিয়ে তো রাখেনি! জমিজমা টাকাকড়ি কেড়ে নিলেও নৌকা করে সেফজোনে পৌঁছে তো দিয়েছে!! এই সম্প্রীতির মাটি, এই ধর্মনিরপেক্ষ জল, এই উদার বাতাস- সত্যিই তুমি ধন্য !!এখনও সময় আছে। সর্পে রজ্জুভ্রম বন্ধ করুন। ভন্ডামি ছেড়ে সাহস অবলম্বন করুন। অস্তিত্বের এই সংকটে বুক চিতিয়ে রুখে দাঁড়ান। পশ্চিমবঙ্গকে গ্রেটার বাংলাদেশে পরিণত হওয়া থেকে বাঁচানোর লড়াইয়ে যোগদান করুন।