এই বাংলার মাটিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি, সরকারী সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি সমস্ত ক্ষেত্রে বাঙ্গালীর অগ্রাধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে। বাঙ্গালী মানে বাঙ্গালী। বাঙ্গালী মানে ‘বাঙালি’ ভেকধারী আরবীয় জনগণ নয়।
ওবিসি-এ বাতিল করতে হবে, মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে, প্রতি সপ্তাহে ধর্মাচরণের নামে রাস্তা বন্ধ করে রাখা সহ্য করা হবে না, জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকার অবমাননা কঠোর হাতে দমন করতে হবে, এনআরসি করে বাংলাদেশী মুসলমানদের তাড়াতে হবে, সিএএ প্রয়োগ করে শরণার্থী হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিতে হবে, সবার জন্য অভিন্ন দেওয়ানী বিধি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে, জনসংখ্যার ভারসাম্য রক্ষার জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করতে হবে, সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে মিনি পাকিস্তানে কোটি কোটি টাকার ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া বরদাস্ত করা হবে না, হুকিং করে বিদ্যুৎ চুরি করে জনগণের উপরে সেই বিলের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার সিস্টেম বন্ধ করতে হবে, হজ হাউসে গঙ্গাসাগরের তীর্থযাত্রীদেরও থাকার সুবিধা দিতে হবে, ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে সহবাসকে ধর্ষণের থেকেও গর্হিত অপরাধ বলে গণ্য করতে হবে এবং কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, ইমামভাতা ও পুরোহিত ভাতা-দুটোই বন্ধ করতে হবে। সমস্ত অধিকৃত দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার করে সেগলোকে সমাজ জাগরণের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
বাঙ্গালীর উপরে মা সরস্বতীর বরদান আছে। বাঙ্গালীর মেধাকে আমরা মর্যাদা দিয়ে বাঙ্গালীর উত্থানের কাজে ব্যবহার করতে পারি নি। বাঙ্গালী সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকায় এবং পদমর্যাদায় সুপ্রতিষ্ঠিত আছে কিন্তু এখানে এমন একটা সিস্টেম তৈরি করে রাখা হয়েছে যেখানে ‘ন্যুইস্যান্স ভ্যালু’-র সম্মান আছে কিন্তু মেধাশক্তির মূল্যায়ন নেই। এই সিস্টেম ভাঙতে হবে, একটা নতুন ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি’-র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এক্ষেত্রেও বাঙ্গালীকেই বাকি ভারতের পথপ্রদর্শক হতে হবে। একবার পরিবেশ তৈরি হলে বিনিয়োগ আসতে অসুবিধা হবে না।
শিক্ষা ব্যবস্থার বাঙ্গালীকরণ করতে হবে। অন্য ভাষার শিক্ষা এবং চর্চা স্বাগত। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বাংলাভাষার বিদেশিকরণ করার চেষ্টা আমাদের অস্তিত্বের জন্য বড় বিপজ্জনক। তাই ভারতীয় বাংলাকে বাংলাদেশী বাংলা থেকে আলাদা করতে হবে এবং ভারতীয় বাংলাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় থাকবে রাজা শশাঙ্ক, প্রতাপাদিত্য, গণেশদের বীরত্বের ইতিহাস, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর-রাজা রামমোহন-ঋষি অরবিন্দ-স্বামী বিবেকানন্দ-ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র-কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ- কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের সাংস্কৃতিক অবদানের ইতিহাস, বাঘাযতীন-ক্ষুদিরাম-বিনয়-বাদল-দীনেশ-মাস্টারদার মত অসংখ্য বীর বাঙ্গালীর স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগের ইতিহাস, আচার্য জগদীশ চন্দ্র-মেঘনাদ সাহা-সত্যেন বসু-আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্রের মত মণীষিদের ইতিহাস। এই তালিকা লিখে শেষ করা যাবে না কিন্তু আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এঁদের সম্পর্কে চর্চার পরিসর ক্রমশঃ কমছে। প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি থাকবে কারিগরি শিক্ষা, সৈনিক শিক্ষা, প্রশাসনিক শিক্ষা ইত্যাদি। শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে আর একটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিৎ। সেটা হল ভারতীয় দর্শন এবং পৃথিবীর অন্যান্য প্রমুখ মতবাদগুলির তুলনামূলক পর্যালোচনা। এই ফেক সেকুলারিজমকে আস্তাকুঁড়ে ফেলতে হলে এই বিষয়টি আবশ্যিক হতে হবে। বাঙ্গালী যুবকদের পুলিশ এবং সেনাবাহিনীতে যোগদান করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ‘বঙ্গ রেজিমেন্ট’ গঠন করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে এরাজ্যে অবাঙ্গালীদের স্টেটাস কী হবে! অবাঙালি ভারতীয়রা চাইলে এরাজ্যে সসম্মানে থাকবেন। মনে রাখতে হবে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং ‘বাঙ্গালী’ বৃহত্তর হিন্দু সমাজের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। অবাঙ্গালী ভারতীয়রা আমাদের বৃহত্তর পরিবারের (Extended family) সম্মানীয় সদস্য। এরাজ্যে তারা ট্যাক্স দিয়ে ব্যবসা করবেন, চাকরি করবেন, সমস্ত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করবেন – এতে কারও কোনও আপত্তি থাকা উচিৎ নয়। কিন্তু তাদের কাছে আবেদন, বাংলার মাটিতে বাঙ্গালীদের অগ্রাধিকারের যৌক্তিকতাকে আপনারা সহজভাবে স্বীকার করে নেবেন এবং বৃহত্তর ভারতীয় পরিবারের সম্মানীয় সদস্য হিসেবে সকলের সাথে মিলেমিশে থাকবেন। আপনাদের নিরাপত্তা এবং সম্মান রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। রাজনৈতিক ক্ষমতার আকাঙ্ক্ষা থাকলে জনসেবা করবেন, মানুষের পাশে দাঁড়াবেন, আমরা আপনাকে আমাদের প্রতিনিধি হিসেবে মেনে নিতে দ্বিধা করবো না। কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের জন্য ‘ঘেটো’ তৈরি করার চেষ্টা করবেন না। এতে পারস্পরিক সন্দেহের পরিবেশ তৈরি হবে, অশান্তি হবে।
এগুলো একান্তভাবে আমার ব্যক্তিগত মতামত, সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নয়।