“….ভারতবর্ষে #মুসলমান প্রভাব আরম্ভ হইবার সময় হইতে আজ পর্যন্ত #হিন্দু উৎপীড়িত হইয়াছে, উৎপীড়ণ করে নাই। মুসলমানধর্ম রাজধর্ম বলিয়া, উৎপীড়ক ধর্ম বলিয়া ভারতবর্ষে হিন্দুর সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস হইয়া মুসলমান-ধর্মালম্বীর সংখ্যা বৃদ্ধি হইয়াছে। হিন্দুর এই সংখ্যা হ্রাসের অন্যতম প্রধান কারণ, হিন্দুর সামাজিক অত্যাচার ও অবিবেচনা। সম্প্রতি সেগুলি দূর করিবার চেষ্টা হইতেছে, এইটাই ভারতবর্ষের পরম শুভ লক্ষণ। শুদ্ধি ও সংগঠন আন্দোলন এই সামাজিক দুর্নীতি দূর করিবার প্রচেষ্টা মাত্র। অবশ্য, এ কথা বলিলে মিথ্যা বলা হইবে যে, #শুদ্ধি_আন্দোলন নিছক সামাজিক দুর্নীতি উচ্ছেদের প্রচেষ্টা; ইহার অন্য একটি দিকও আছে; ইহা শুধু আত্মরক্ষা করিবার উপায় নহে, আক্রান্ত ব্যক্তির উদ্ধারসাধনও এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য। মুসলমানের সহিত বিরোধ ব্যাধিতেছে এই শুদ্ধি আন্দোলনের এই দিকটি লইয়া। …..গত এপ্রিল মাস হইতে পর পর যে কটি #দাঙ্গা বাংলার উপর হইয়া গেল তাহাতে হিন্দু এই বুঝিয়াছে যে, ক্ষমা ও প্রেম নিরীহের মহত্ব নহে, দুর্বলতা মাত্র, হিন্দু যদি সবল হইত, ঠেঙ্গানির উত্তর যদি সে ঠেঙ্গানি দিয়া দিতে পারিত তাহা হইলে প্রীতি-মৈত্রীর কথা অপ্রাসঙ্গিক হইত না বটে, কিন্তু এখন যখন মার্ খাইয়া ফ্যালফ্যাল করিয়া চাহিয়া থাকা ছাড়া গত্যন্তর নাই তখন প্রীতির বার্তা প্রচন্ড উপহাস ছাড়া কিছুই নয়। …ভারতের হিন্দুর অবমাননা ও লোকক্ষয়-রোগের একমাত্র প্রতিকার শুদ্ধি-আন্দোলন ও সংগঠন। হিন্দু দলবদ্ধ হউক। প্রাণ দিয়া ধর্ম রক্ষা করুক। যদি বীরের মত মরিতে প্রস্তুত না থাকে, অলক্ষ্যে ছুরি খাইয়া মরিতে হইবে। যদি মৃতপ্রায় এই হিন্দুজাতিকে বাঁচাইয়া তুলিবার চেষ্টা তুমি আমি প্রত্যেকেই না করি, তাহা হইলে সকলের মুসলমান হইয়া মুসলমান সাম্যবাদের আস্বাদ গ্রহণ করিয়া হাসান-হুসেন বলিয়া বুকে করাঘাত করত পরের মাথায় লোষ্ট্র নিক্ষেপ করাই চরম পথ বলিয়া মানিয়া লওয়া ভাল। “
– শুদ্ধি আন্দোলন – শ্রী সজনীকান্ত দাস (প্রকাশনা: হিন্দু – সঙ্ঘ , ১৯শে আশ্বিন, ১৩৩৩।) মূল গ্রন্থ – “আত্মস্মৃতি – শ্রী #সজনীকান্ত_দাস – প্রকাশক: শ্রী ইন্দ্রনাথ মজুমদার, প্রকাশনা সংস্থা – সুবর্ণরেখা, প্রথম প্রকাশকাল/পূর্ণাঙ্গ সংস্করণ – ৭ অগ্রহায়ণ, ১৩৬১। শ্রী সজনীকান্ত দাস – প্রখ্যাত সম্পাদক, শনিবারের চিঠি।